টি২০ বিশ্বকাপের নবম আসর বসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে। এই আসরে অংশ নেবে মোট ২০টি দল। গ্রুপ পর্ব শেষে রয়েছে সুপার এইট পর্ব, যেখানে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে খেলার পর চারটি দল উঠবে সেমিফাইনালে।টি২০ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ। ‘ডি’ গ্রুপে এছাড়াও বাংলাদেশকে খেলতে হবে শ্রীলংকা, নেদারল্যান্ডস ও নেপালের বিপক্ষে।
কে কোন গ্রুপে পড়েছে, তা নির্ধারিত হয়ে গেছে। তবে গ্রুপ পর্বের ড্র এখনো প্রকাশ করেনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। যদিও ব্রিটিশ পত্রিকা টেলিগ্রাফ এক প্রতিবেদনে গ্রুপিং নিয়ে তথ্য ফাঁস করেছে।
টেলিগ্রাফের তথ্যমতে, ‘এ’ গ্রুপে ভারত, পাকিস্তান, আয়ারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা; ‘বি’ গ্রুপে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নামিবিয়া, স্কটল্যান্ড ও ওমান; ‘সি’ গ্রুপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান, পাপুয়া নিউগিনি ও উগান্ডা এবং ‘ডি’ গ্রুপে বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা, নেদারল্যান্ডস ও নেপাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
‘এ’ গ্রুপের সব খেলা হবে যুক্তরাষ্ট্রে। এই গ্রুপের আকর্ষণ ভারত-পাকিস্তান মহাদ্বৈরথ। এছাড়া, আয়ারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। ম্যানহাটন থেকে ৩০ মাইল দূরবর্তী আইজেনহাওয়ার পার্কে গ্রুপের সব ম্যাচ হবে।
‘বি’ গ্রুপের সব খেলা হবে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড খেলবে ওয়ানডের বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও স্কটল্যান্ড, নামিবিয়া ও ওমানের বিপক্ষে। ইংল্যান্ড তাদের ম্যাচ খেলবে অ্যান্টিগা, বার্বাডোজ ও সেন্ট লুসিয়ায়। তারা প্রথমেই মুখোমুখি হবে প্রতিবেশী দেশ স্কটল্যান্ডের।
‘সি’ গ্রুপে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান, পাপুয়া নিউগিনি ও উগান্ডার ম্যাচগুলো হবে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে। আর ‘ডি’ একমাত্র গ্রুপে যার ম্যাচগুলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে ভাগাভাগি করে অনুষ্ঠিত হবে। এই গ্রুপে খেলবে বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা, নেদারল্যান্ডস ও নেপাল।
সুপার এইটে দুটি গ্রুপ (গ্রুপ-১ ও গ্রুপ-২) থাকবে। কে কোন গ্রুপে পড়বে, সেটি নির্ধারিত হবে টুর্নামেন্টের আগে র্যাংকিং অনুসারে, প্রথম পর্বে কে কেমন করেছে তার ওপর নির্ভর করে নয়। যেমন, ইংল্যান্ড ‘বি-১’ হিসেবে সুপার এইট পর্বে উঠবে, তাতে গ্রুপ পর্বে দ্বিতীয় হলেও। র্যাংকিং বিচারে ইংল্যান্ড যদি গ্রুপ পর্ব পেরোতে পারে তবে সুপার এইট পর্বে খেলতে হতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে।
র্যাংকিংয়ের ভিত্তিতে নির্ধারিত আট দলের মধ্যে নেই বাংলাদেশ। ফলে বাংলাদেশ যদি সুপার এইটে ওঠে তবে দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা শ্রীলংকার জায়গা নেবে।
টি২০ বিশ্বকাপের এমন ফরম্যাট নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন উঠছে। কেননা, এমনও হতে পারে, গ্রুপ পর্বের চার বিজয়ী দলই সুপার এইট পর্বে একই গ্রুপে মুখোমুখি হবে। কাজেই তখন চার গ্রুপের রানার্সআপ দলগুলো সুপার এইটে মুখোমুখি হবে!
বিশ্বকাপের মূল স্বাগতিক দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সি-১, নাকি সি-২ হিসেবে ড্রতে পড়ে, তার ওপর নির্ভর করবে অনেক কিছু। তবে নিউজিল্যান্ডেরই সি-১ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সেক্ষেত্রে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হবে সি-২।
র্যাংকিংয়ের বিচারে বাছাইকৃত দলের বাইরে থেকে কেউ যদি সুপার এইট পর্বে উঠে যায়, তবে সে কোন পজিশনে খেলবে? এটা জানা গেছে, তারা যে দলটিকে বিদায় করেছে সেই দলের জায়গা নেবে। যেমন, স্কটল্যান্ড যদি অস্ট্রেলিয়া হারিয়ে সুপার এইটে ওঠে, তবে তারা অস্ট্রেলিয়ার ‘বি-২’ জায়গাটি নিয়ে নেবে, সেক্ষেত্রে তারা গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন কিংবা রানার্সআপ হলো কিনা, তা বিবেচ্য নয়।
আবার গ্রুপ পর্ব যেভাবে সাজানো হয়েছে, সেটি নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। প্রশ্ন উঠছে টুর্নামেন্টের চেতনা নিয়ে। র্যাংকিংয়ের তলানির চারটি দলকে দুটি গ্রুপে ফেলা হয়েছে। ১৯ র্যাংকধারী পাপুয়া নিউগিনি ও ২২ র্যাংকধারী উগান্ডা ‘সি’ গ্রুপে এবং ২৩ র্যাংকধারী যুক্তরাষ্ট্র ও ২০ র্যাংকধারী কানাডা ‘এ’ গ্রুপে পড়েছে।
টুর্নামেন্টের প্রায় অর্ধেকের মতো দল যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাচ খেলবে। দক্ষিণ এশিয়ার দলগুলোর বিপুল দর্শক সমর্থনের কথা মাথায় রেখে ফিকশ্চার সাজানো হচ্ছে। এশিয়ার সাতটি দেশের পাঁচটিই যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাচ খেলবে। যদিও রাজনৈতিক স্পর্শকাতরতার বিষয়টি মাথায় রেখে আফগানিস্তানের ম্যাচ এখানে রাখা হয়নি।
চারটি গ্রুপের মধ্যে ‘ডি’ গ্রুপেই সবচেয়ে বেশি লড়াই হবে বলে ধারণা করা হয়। ২০২২ সালের টি২০ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিদায় করে নেদারল্যান্ডস। এ গত বছর ভারতের হিমাচলে ওয়ানডে বিশ্বকাপ ম্যাচেও প্রোটিয়াদের হারানোর কৃতিত্ব অর্জন করে ডাচরা। এবার টি২০ বিশ্বকাপেও দেখা হচ্ছে দুই দলের। এছাড়া বাংলাদেশ, শ্রীলংকার মতো শক্তিশালী দল ছাড়াও রয়েছে এশিয়ার উদীয়মান দল নেপাল।