তবে ভাইরাল শব্দটি আগাগোড়ায় বিপদজনক ছিলো। তবে আধুনিক সভ্যতা এই ভাইরাল কে জনপ্রিয় করেছে। বরং ভাইরাল এখন নিজেই একটি সম্পদ। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব ভাইরালকে দিয়েছে ইতিবাচক ভাবমূর্তি। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো ভাইরাল হওয়ার জন্য খোঁজে নানা উপায়। টাকা কামানোর আশায় ভাইরাল হতে নারী পূরুষ কাপড় খুলে ফেলতেও দ্বিধা করে না। তারপরও ভাইরাল হতে হবে। হিরো থেকে জাহিদ, জাহিদ থেকে সৌদি আরব সবখানেই ভাইরালের জয়গান। ধর্ম আলেমও বাদ নেই। নেই শিশু।
তবে এই ভাইরালের উল্টো দিকও আছে,অনলাইনে ভাইরাল হওয়ার কারণে অনেকের জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ, ছড়ায় ভুল তথ্য, কোনো ছবি, ভিডিও বা লেখা অনলাইনে হড়কা বানের মতো প্রচণ্ড গতিতে বয়ে গেলেই আমরা সেটাকে বলা শিখে গিয়েছি।
এই যেমন ছবি, ভিডিও বা লেখাগুলো অনেক সময় বানের তোড়ে ভেসে যায়। কোনো কোনোটি স্রোত থেকে বেরিয়ে স্থায়ী আসন গাড়ে। এর কোনো কোনোটি সমাজে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। কিছু ভাইরাল বিষয় স্রেফ আনন্দ দিয়ে যায়, কোনোটি ভাবায় কিংবা কাঁদায়। এই হলো এক কথায় আমাদের “ভাইরাল কাকা”। আজকাল আমরা সবাই মনে মনে বা চিন্তায় গভীরে ভাইরাল কাকাকেই খুঁজে ফিরি।
কিন্তু বিজ্ঞানের বেপক আগমনের আগেও ভাইরাল হতো। এর একটি উদহারণ হতে পারে,খনার বচন। লিখিত কোনো রূপ ছিল না, কিন্তু আজও মানুষ খনার বচন মুখস্থ আওড়ায় গড়গড় করে। কারণ, খনার বচনও এক অর্থে অ্যানালগ ভাইরাল হয়েছিল। তখন মাধ্যম বলতে ছিল কেবল ব্যক্তির মুখ। বিদুষী খনা ভবিষ্যদ্বাণী করতেন। সেগুলো ফলেও যেত হাতেনাতে। মানুষের বিস্ময়ের সীমা থাকত না। একজন আরেকজনকে খনার বচনের কথা বলত আগ্রহ নিয়ে। এভাবেই খনার বচন টিকে আছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। তবে সত্যি কথা বলতে কি নতুন প্রজন্ম এই খনার বচন কতটা চর্চা করবে সেটা অবশ্য চিন্তার কারণ।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট।