ঢাকা : বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফের) আপিল কমিটির সভায় বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপির) উপর অর্পিত শাস্তি তুলে নেয়া হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার (০৪ জানুয়ারি) দুপুরে আশুলিয়ার জিরানী বাজারস্থ বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপির) কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো: মোতাহের হোসেন এনডিসি, পিএসসি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন আয়োজিত ঢাকা মহানগরি ৩য় বিভাগ অ-১৭ ফুটবল লিগে চকবাজার কিংস ক্লাব বিকেএসপি’র সাথে ২০২১-২২ মৌসুমের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। এ দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেন বিকেএসপির ফুটবল কোচ মো: রবিউল ইসলাম। পরবর্তীতে লিগে চকবাজার কিংস নামধারী বিকেএসপি দলটি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। উল্লেখ্য কিংস ক্লাব কর্তৃপক্ষ বিকেএসপির ৪ জন খেলোয়াড়ের বয়স বেশি হওয়ার কারণে নাম পরিবর্তন করে খেলার ব্যবস্থা করে।
এরপর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন আয়োজিত বসুন্ধরা গ্রুপ ২য় বিভাগ ফুটবল লিগ ২০২২-২৩ মৌসুমে বিকেএসপি দল অংশগ্রহণ করে। এসময় বাফুফে বিকেএসপি কর্তৃপক্ষকে ৩ জন খেলোয়াড়কে না খেলানোর জন্য পত্র প্রেরণ করে। সে মোতাবেক তাদেরকে খেলা থেকে বিরত রাখা হয় এবং বাফুফে বিকেএসপির তিন খেলোয়াড়কে, মো: তাসিন, ইহসান হাবিব রিদওয়ান এবং মো: রিফাত কাজীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করে।
মহানগরি লিগ কমিটি বিকেএসপির খেলোয়াড় মো: ইকরামুল ইসলামকে বৈধ খেলোয়াড় হিসেবে খেলার অনুমতি প্রদান করলে ইকরামুল আরামবাগের বিপক্ষে খেলায় অংশগ্রহণ করে। ফলে আরামবাগ কর্তৃপক্ষ ইকরামুলের বিরুদ্ধে ৩য় বিভাগে নাম পরিবর্তন করে খেলার বিষয়টি বাফুফের নিকট ২৪/১১/২০২৩ তারিখ প্রতিবাদ দাখিল করে।
এর প্রেক্ষিতে বাফুফে ডিসিপ্লিনারি কমিটি বিকেএসপি ফুটবল দলকে এক বছরের জন্য বাফুফের সকল কার্যক্রম হতে বিরত এবং এক লক্ষ টাকা আর্থিক জরিমানা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এছাড়া বিকেএসপির সিনিয়র কোচ (ফুটবল) মো: শাহীনুল হক ও কোচ (ফুটবল) মো: রবিউল ইসলাম কে এক বছরের জন্য বাফুফের সকল কার্যক্রম হতে বিরত এবং ২৫ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা করে।
পরবর্তীতে বিকেএসপি ০৭/১২/২০২৩ তারিখ বাফুফের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করলে বাফুফে গত ২৮/১২/২০২৩ তারিখে আপিল কমিটির সভায় বিকেএসপি ফুটবল দলের উপর থেকে অরোপিত শাস্তি তুলে নেয় এবং বিকেএসপির সিনিয়র কোচ মো: শাহীনুল হকের শাস্তিও তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
এবিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো: মোতাহের হোসেন বলেন, এ ধরনের ঘটনা বিকেএসপি ও বাফুফের মধ্যকার ভুল বোঝাবুঝির ফলে সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিকেএসপির আপিলের মাধ্যমে দুই পক্ষের ভুল বোঝার অবসান হয়েছে।
আগামীতে বিকেএসপির খেলোয়াড়রা যাতে আরও স্বচ্ছতা বজায় রেখে ফেডারেশন আয়োজিত প্রতিযোগিতা গুলোতে খেলতে পারে সেদিকে সতর্কতা অবলম্বন করা হবে বলে জানান।
উক্ত ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে মহাপরিচালক অভ্যন্তরিন তদন্ত চলমান থাকার বিষয়টি অবগত করেন এবং তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বিকেএসপির পরিচালক (প্রশিক্ষণ) কর্ণেল মো: মিজানুর রহমান, উপ-পরিচালক (প্রশিক্ষণ) উজ্জ্বল চক্রবর্তী শিবু, জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: আশরাফুজ্জামান প্রমূখসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীগণ।