সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী চন্দনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দিনভর তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সহ সকল সদস্য, শিক্ষক কর্মচারীদের নিয়ে আলোচনায় বসেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জয়নুল আবেদীন, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার তাপস কুমার দাস, অফিস সহকারী সমরেশ দেবনাথ।
প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, তদন্তের সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান আনছার আলীকে মোট নয়টি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্ত টিমের প্রধান জয়নুল আবেদীন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিনিয়র এক শিক্ষক জানান, প্রতিষ্ঠান প্রধান কোন সন্তোস জনক উত্তর প্রদান করতে পারেননি।
তদন্তের সময় যে বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্যভাবে উঠে আসে, বিল ভাউসারে অনিয়ম, আয়-ব্যায়ের কোন রেজ্যুলেশন নেই, রেজ্যুলেশন বই নেই, ম্যানেজিং কমিটি সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়েছে তার কোন প্রমান নেই, দীর্ঘ ২০ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত না থাকার বিষয়ে কোন সদোউত্তর দিতে পারেনি, ম্যানেজিং কমিটির তিনটি শোকজ নোটিশ গ্রহণ করেননি এবং ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক সাময়িক বরখাস্তের চিঠি ডাকযোগে পাঠালে প্রধান শিক্ষক সেটা গ্রহণ করেননি।
তদন্তের সময় উপস্থিত ছিলেন, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও চন্দনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডালিম হোসেন, স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোছা: সাহানিমা আকতার, সিনিয়র শিক্ষক বাবু অলোক কুমার ঘোষ, সিনিয়র শিক্ষক আব্দুর রহমান, সিনিয়র শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, সিনিয়র শিক্ষিকা রাজিয়া খাতুন, সিনিয়র শিক্ষক পার্থ সারথী মজুমদার, সিনিয়র শিক্ষক আজিজুর রহমান, সিনিয়র শিক্ষিকা হাসিনা খাতুনসহ সকল শিক্ষক-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ম্যানেজিং কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্য মো: নাজমুস সাকিব, সদস্য মো: তবিবর রহমান সহ কমিটির সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ডালিম হোসেন জানান, আমরা কমিটিতে আসার পর ছয় মাসে দুই লক্ষ একান্ন হাজার টাকা নিয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাব না দেওয়ার তালবাহানা শুরু করেন। স্ট্যাম্পে ডিড করে প্রতিষ্ঠানের অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি কোন প্রকার আলোচনায় বসতেন না। নানা অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় বিগত ২৪ জুন সোমবার ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রধান শিক্ষককে সাময়িক রবখাস্ত করা হয়। এখন আমাদের দাবি প্রধান শিক্ষককে পূর্ণাঙ্গ বরখাস্ত করে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
তদন্ত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিষ্ঠানের প্রধান আনছার আলী ক্যামেরার সামনে কথা বলতে আপত্তি জানান।
তবে পরবর্তীতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি সকল প্রশ্নের উপযুক্ত জবাব দিতে সক্ষম হয়েছি এবং প্রমাণ দাখিল করতে সক্ষম হওয়ায় তদন্ত টিমের প্রধান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জয়নুল আবেদীন বুধবার (১৭ই, জুলাই) ইং তারিখ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সকল দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।
তদন্ত টিমের প্রধান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জয়নুল আবেদীন এর সাথে সাংবাদিকরা প্রতিষ্ঠানের তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন কথা না বলেই প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করেন।