ঢাকা : বাংলাদেশে প্রতি বছর বজ্রপাতে নিহত হয় ২শর উপর মানুষ। গত ১ যুগের ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করে জানা যায় প্রায় সারে ৩ হাজার মানুষ নিহত হয়। এই বজ্রপাত নিয়ে কাজ করেন এমনই একটি বেসরকারি সংগঠন ডিজাস্টার ফোরাম। তারা বলেন এই বছরে মে মাসেই বজ্রপাতে সর্বোচ্চ ১২০ জনের মৃত্যু ঘটে।
গত ১ যুগের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করলে এটি পরিস্কার হয়ে যাবে। বছর বছর এই বজ্রপাতের নিহতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। যা ভবিষ্যতের জন্য বিপদজনকও বটে। এমনিতে আমাদের দেশে দিন দিন শহর উন্নয়ন আর নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে প্রকৃতির ভারসাম্য হুমকিতে। অন্যদিকে বিশ্বব্যপী উন্নতশীল দেশগুলির নানাবিধ পরিকল্পার কারণে এশীয়ার অন্য দেশগুলি সহ আমদের দেশও হুমকির মুখে। তাই প্রতি বছর বন্যা, খরা, ঝড়বাদল দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। এখন তো পুরো শহর অল্প বৃষ্টিপাতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। যদিও বিশ্ব জলবায়ু সংস্থা ক্ষতিপূরণ দেন কিন্তু তা দিয়ে কি প্রকৃতির ভারসাম্য আমরা রক্ষা করতে পারবো?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক আসাদুল হক মনে করেন, বজ্রপাত যেহেতু উঁচু জায়গায় আঘাত করে, সে হিসেবে তাল গাছ মৃত্যু কমাতে সহায়ক হবে। কারণ এক একটি তাল গাছ ১০০ ফুট উঁচু হয়। বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে সরকার একে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা দেয়। এরপর বজ্রপাতে মৃত্যু রোধে একাধিক প্রকল্পও নেওয়া হয়। এর মধ্যে একটি ছিল তালগাছ লাগানো। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ওই প্রকল্পে ৪০ লাখ তালগাছ লাগানোর কথা থাকলেও তা ব্যর্থ হয়।
তাল গাছের বেড়ে উঠার সব থেকে বড় সমস্যা হলো দেরীতে বড় হওয়া। তাল গাছ শত বছর বেঁচে থাকে। আর এটি বড় হতেও সময় নেয় ২০ বছরের মত। সেদিক দিয়ে তাল গাছ একটি ইতিহাসের সাক্ষী গাছও বটে। তাই হয়তো খনার বচন রচিত হয়, “এক পুরুষে রোপে তাল/অন্য পুরুষে করে পাল। তারপর যে খাবে/তিন পুরুষে ফল পাবে।’
তবে দেশে তাল গাছ ছড়িয়ে দেওয়া দরকার। এমনিতে যা তাল গাছ আছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এর জন্য সরকার সহ নিজেদের ইচ্ছার প্রয়োজন আছে। বিষয়টা খনার বচনের মতই দেশের এক একটি নাগরিক কে ভাবতে হবে, আপনি হয়তো থাকবেন না আপনার লাগনো তাল গাছটি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে শত বছর। তবে যথাতথা তাল গাছ কাটার বিধান দরকার অনেকটা ভারতীয় চন্দন গাছের মত। সরকার এর দ্বায়িতে থাকবেন। তবে হয়তো ভবিষ্যতে এই প্রাকৃতিক বিপদ-আপদ কমে যেতে পারে।